শ্রীলঙ্কার ভিক্ষু সংঘ মহানায়ক চন্দ্রসিরি থেরা মারা গেছেন

শ্রীলঙ্কার প্রখ্যাত বৌদ্ধ আধ্যাত্মিক ভিক্ষু পরম শ্রদ্ধেয় দোদামপাহালা চন্দ্রসিরি থেরা গত ১৬ মে ৮৪ বছর বয়সে পরলোকগমন করেছেন। পূজনীয় অমরাপুরা বৌদ্ধ বিহার অধিপতি চন্দ্রসিরি থেরা মৃত্যুর আগে কলম্বোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

পূজনীয় ভান্তের শেষকৃত্য গত রবিবার কলম্বোর ইন্ডিপেন্ডেন্স স্কোয়ারে সম্পন্ন হয়। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী দীনেশ গুণবর্ধনে, স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে এবং বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে বিশাল জনসমাবেশে হাজার হাজার বৌদ্ধ ভিক্ষু ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

শ্রীলঙ্কার ভিক্ষু সংঘ মহানায়ক চন্দ্রসিরি থেরা মারা গেছেন

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, “প্রয়াত পূজনীয় চন্দ্রসিরি থেরা জাতীয়, বুদ্ধ শসনিকা এবং সামাজিক অস্থিরতার সময়ে নির্ভয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।” এই মহান বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রীলঙ্কার সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের কাছে ভিক্ষুদের পিতা হিসাবে পরিচিত। যিনি শ্রীলংকার চরম দুঃসময়ে সকলকে ধর্য্য ধারন ও ভিক্ষুসংঘের অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য কাজ করেছিলেন।

রাষ্ট্রপতি পরিষেবায় বিশেষ অতিথি বইয়ে একটি শোকবার্তা প্রদান করেন এবং পূজনীয় ভান্তের শ্মশান অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

পূজনীয় চন্দ্রসিরি থেরাকে ২০২১ সালের জুলাই মাসে অমরাপুর ভিক্ষু মহা নিকায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু বা প্রধান প্রিলেটের পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তাঁর পূর্বসূরি ছিলেন প্রয়াত সর্বশ্রদ্ধেয় অগ্গামহাপাণ্ডিতা কোতুগোদা ধম্মভাসা মহানায়ক থেরা (১৯৩৩-২০২১)। ভিক্ষু চন্দ্রসিরি ২০ ডিসেম্বর, ১৯৩৯ সালে দক্ষিণ শ্রীলঙ্কার দোদামপাহালায় জন্মগ্রহণ করেন। চন্দ্রসিরি থেরা এদিরিভিরা পাতাবন্দিগে সারানেলিস সিলভা এবং এদিরিসুরিয়া পাতাবন্দিগে মিসিনোনার পুত্র। তিনি ১৯৫০ সালে শ্রামণ্যধর্মে দিক্ষিত হন এবং ১৯৬২ সালে উপাসম্পাদা গ্রহণ করার মাধ্যমে ভিক্ষুধর্ম প্রবেশ করেন।

শ্রীলঙ্কার ভিক্ষু সংঘ মহানায়ক চন্দ্রসিরি থেরা মারা গেছেন

ভক্ত এবং শিষ্যরা শ্রদ্ধেয় ভান্তের প্রয়ানে যে ক্ষতি হয়েছে তার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন। শ্রীলংকায় বৌদ্ধধর্ম প্রচার ও সংরক্ষণে তাঁর অসাধারণ অবদানের স্মৃতিকে স্মরণ করেছে সকলে।

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধ ধর্ম হলো রাষ্ট্রীয় ধর্ম, ২০১২ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুসারে, এই দেশে প্রায় ২০ মিলিয়ন লোকের জনসংখ্যার ৭০.২ শতাংশ থেরবাদ বৌদ্ধ হিসাবে চিহ্নিত৷ এখানে হিন্দুরা জনসংখ্যার ১২.৬ শতাংশ, মুসলমানরা ৯.৭ শতাংশ, খ্রিস্টান ৭.৪ শতাংশ এবং অন্যান্য ০.০৫ শতাংশ।

যদিও শ্রীলঙ্কার সংবিধানে বৌদ্ধধর্ম দেশটির রাষ্ট্রিয় ধর্ম হলেও এখানে অন্যান্য ধর্ম পালনে কোন বাঁধা নাই। বর্তমানে, দেশটিতে প্রায় ৬০০০ বৌদ্ধ বিহার এবং প্রায় ১৫,০০০ বৌদ্ধ ভিক্ষু রয়েছে৷

আরো পড়ুন>>

শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!