মিডল ওয়ে এডুকেশনে যোগ দিলেন কানাডার সাবেক কনসাল লি। বিশ্ব জুড়ে বৌদ্ধ চেতনায় মিডল ওয়ে এডুকেশন চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে তিব্বতী বৌদ্ধ ভিক্ষু জংসার খিয়েনসে রিনপোচে। এই লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিডল ওয়ে এডুকেশন বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ব্র্যান্ডন লি-কে।
মিডল ওয়ে এডুকেশন মূলত গৌতম বুদ্ধের মধ্যম পন্থা কনসেপ্টকে কেন্দ্র করেই সাজানো একটি শিক্ষা ব্যবস্থা। মিডল ওয়ে এডুকেশন এর ওয়েভ সাইটের তথ্যমতে, এটি একটি অলাভজনক সংস্থা যা তিব্বতী বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু জংসার খিয়েনসে রিনপোচে এবং অন্যান্য বৌদ্ধ মাস্টারদের দ্বারা পরিচালিত। এর লক্ষ্য হল বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের মধ্যে বৌদ্ধ প্রজ্ঞা ও জ্ঞান প্রসারিত করার মাধ্যমে আধুনিক শিক্ষাকে উন্নত করা।
এক ঘোষণায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কানাডার সাবেক কনসাল জেনারেল লি বলেন, “আমার কাছে মিডল ওয়ে এডুকেশন বেশ চমকপ্রদ একটি বিষয়। এটি আমাদের বর্তমান চলমান প্রাসঙ্গিক শিক্ষাকে ধর্ম জ্ঞানের সাথে একীভূত করতে সাহায্য করবে। আমি এর উদ্যেগক্তাদের বিশেষভাবে প্রশংসিত করতে চাই। তারা এই শিক্ষা কাঠামোটি বৌদ্ধ বিশ্বের পন্ডিত ব্যাক্তিদের পরামর্শক্রমে সাজিয়েছেন। আমি এই বোর্ডের অংশ হতে পেরে এবং যেকোন ভাবে সাহায্য করতে পেরে অত্যান্ত আনন্দিত এবং সম্মানিত বোধ করছি।”
মিডল ওয়ে শিক্ষাবোর্ডের অন্যান্য সদস্যগণ হলেন, আমেরিকার নিউ ইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত জেন মাউন্টেন মঠের মানওয়াই এনজি, ব্রাজিলের চাগদুদ খাদ্রো, স্কুল শিক্ষক মাইকেল ম্যাসিওস, থাইল্যান্ডের পেমা আব্রাহামস, কুহন সুচরিতাকুল এবং মিডল ওয়ে এডুকেশন বোর্ডের চেয়ারম্যান নোয়া জোন্স।
চেয়ারম্যান জোন্স, নবাগত ডিরেক্টর লিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে বলেন, “আমরা এমন একজনকে পেয়ে অনুপ্রাণিত হয়েছি যিনি এই মহাদেশের সর্বোচ্চ পদে কর্মরত ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ”লি দেখেছেন, বুদ্ধের শিক্ষাই আধুনিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে সবচেয়ে কর্যকর। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের নেতা। বুদ্ধের অহিংসা, জীব প্রেম, সমতার শিক্ষা তাদেরকে বিচক্ষণতা, সমতা, অনুসন্ধানের প্রতি সম্মান এবং মানসিক বিকাশের সুযোগ করে দিবে। মিডল ওয়ে এডুকেশন কার্যকরের মাধ্যমে আমরা একটি সুন্দর ভবিষ্যত আশা করতে পারি।”
মিডল ওয়ে এডুকেশন মূলত একটি অসাম্প্রদায়িক সংগঠন, যা জেন, তিব্বতি, থাই ফরেস্ট, শম্ভালা, থেরবাদ এবং অন্যান্য বৌদ্ধ ঐতিহ্যের উপদেষ্টাগণ দ্বারা পরিচালিত। খিয়েন্টসে ফাউন্ডেশনের অনুদান দ্বারা এর খরচ মেটানো হয়। মিডল ওয়ে এডুকেশন ২০১৮ সালে নিউ ইয়র্কের হাডসন ভ্যালিতে তাদের প্রথম পাইলট স্কুল ”মিডল ওয়ে স্কুল” প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ব্রাজিল, নেপাল, থাইল্যান্ড এবং আমেরিকার পশ্চিম উপকূলের বিভিন্ন দেশে এর শাখা রয়েছে।
মিডল ওয়ে এডুকেশনে খরচ দাতা
খিয়েনসে ফাউন্ডেশন একটি অলাভজনক সংস্থা যা ২০০১ সালে জংসার খিয়েন্টসে রিনপোচে দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি বুদ্ধের শিক্ষার প্রচার, প্রসার এবং বৌদ্ধ অধ্যয়ন ও অনুশীলনের সমস্ত ঐতিহ্যকে সমর্থন করার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছিল। এই ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত বৌদ্ধ পন্ডিতগণের লেখা সংরক্ষণ এবং অনুবাদ করা। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিভিন্ন দেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ালেখায় সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বৃত্তি ও পুরষ্কার প্রদান করা, বিশ্বে বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজ বিকাশ, বৌদ্ধ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও অর্থ সহায়তা দেওয়া, শিশু শিক্ষা ইত্যাদি।
মিডল ওয়ে এডুকেশন এর চেয়ারম্যান জোন্স বলেছেন, “শিশুদের মধ্যে অন্তর্নিহিত বুদ্ধিমত্তা এবং দয়া অত্যান্ত গভীর এবং নিখাদ, আমরা শিশুদের এই প্রাকৃতিক গুণাবলী চাষের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে একটি শিক্ষামূলক মডেল তৈরি করছি। আমরা বৌদ্ধ দর্শন এবং অনুশীলনের মাধ্যমে জীবনের শ্বাস প্রশ্বাসের উপায়গুলো খুঁজে পাচ্ছি। তাই ভবিষ্যৎ সুন্দর পৃথিবী গড়তে বুদ্ধের মধ্যম পন্থাই একমাত্র উপায় “
বুদ্ধের মধ্যম পন্থায় জীবন গঠন করতে পারলে পৃথিবী আসলেই শান্তি ও সুখময় হবে। গৌতম বুদ্ধ যে শান্তির পথ আবিষ্কার করেছেন সেটাই মূলত মধ্যম পথ। এই পথ হলো, অর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ, চতুরার্য সত্য, অহিংসা, জীব প্রেম ইত্যাদি। বুদ্ধের এই শিক্ষাই পৃথিবী থেকে সকল অবিদ্য, শ্রেণি বৈষম্য, হিংসা দূর করে সকল দেশ, জাতিকে সহবস্থানে নিয়ে আসতে পারবে।
আরো পড়ুন>>
- মগদ বিশ্ববিদ্যালয়ে বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজের করুণ অবস্থা।
- কোরিয়ান নতুন বৌদ্ধ বিহার উদ্বোধন।
- বৌদ্ধ তহবিলে ৩.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দান করেছেন মার্কিন দম্পতি।
- ধর্ম বিজয় শুভ হউক: হাসানুর রহমান।
- আজ ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত বুদ্ধ পূর্ণিমা।
- বৌদ্ধদের প্রতি তামিম ইকবালের শুভেচ্ছা: শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা।
- বুদ্ধের মস্তকে গুড়ি গুড়ি এসব কি?
- গৌতম বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্মমত: নূহ উল আলম।
- গৌতম বুদ্ধের জীবনী: জন্ম থেকে মহাপরিনির্বাণ।
- তীর্থস্থান: বুদ্ধগয়া
- মহাতীর্থস্থান: লুম্বিনী
- তীর্থস্থান: সারনাথ
বিশ্বের সকল দেশের গৌতম বুদ্ধের নীতি অনুসরণ করলে কোনো দেশের হিংসা বিদ্বেষ সৃষ্টি হবে না।সকল দেশ প্রেম,জীব প্রেম, সুন্দর স্বালীময় গড়ে উঠবে।মানুষ হবে উন্নত বুত্তিমত্তা প্রচার প্রসরনি অঙ্গীকারবদ্ধ প্রেম, ভালোবাসা করুনণাময়।
Your are right Pramit Chakma Dada