হামুন থেকে বাঁচতে ১৫ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হবে

হামুন: ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ আজ মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ১০ জেলার ১৫ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। জেলাগুলো হলো পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর।

আজ সকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।

সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

হামুন থেকে বাঁচতে ১৫ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হবে

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পূর্ব দিকে বরিশাল ও চট্টগ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে। এর বাতাসের গতিবেগ ৮৯ কিলোমিটার থেকে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। এ অবস্থায় আবহাওয়া দপ্তর ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দিয়েছে বলে জানান এনামুর রহমান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ও চরিত্র বিশ্লেষণ করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটি আজ রাত ১০টা থেকে কাল সকাল ১০টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এ জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, রাত ৮টার মধ্যে যেন সব ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আমরা প্রস্তুত করেছি।’

এনামুর রহমান জানান, ‘এসওডি (দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি) অনুযায়ী ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মাঠ প্রশাসন ও আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা দুর্গত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া শুরু করবে।’

আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি জেলায় ২০ লাখ টাকা ও ৫০ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছি। গোখাদ্য ও শিশুখাদ্যের জন্য এক কোটি টাকা করে মোট দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি।’

ঘূর্ণিঝড় হামুন উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটি বাতিল

আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে এনামুর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও মাঠপর্যায়ে উপকূলীয় জেলাগুলোতে আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’

হামুনের গতিপথ গত বছরের ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের মতো জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ জন্য আমরা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছি। গবাদিপশুকেও আমরাও সরিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছি। মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বরিশাল থেকে চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে এটি অতিক্রম করবে। এর কেন্দ্র বা চোখ বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে যাবে।

হামুন মোকাবিলাকে চ্যালেঞ্জ মনে করছেন না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের মতো এটিও আমরা মোকাবিলা করতে পারব।’

এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসানসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!