শ্রীলঙ্কানদের শান্ত থাকার আহ্বান করেছেন আজান ব্রহ্ম বংশ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রখ্যাত ব্রিটিশ-অস্ট্রেলিয়ান বৌদ্ধ শিক্ষক এবং থেরবাদ বৌদ্ধ ভিক্ষু আজান ব্রাহ্ম শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য শ্রীলঙ্কানদের শান্ত থাকার আহ্বান করেছেন। তিনি সকলকে শান্ত থেকে পরিস্তিতি সামাল দিতে অনুরোধ করেছেন। শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধ সংঘের সাথে একটি ভিডিও বার্তায় তিনি এই অনুরোধ করেন। দ্বীপ দেশটি একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হওয়ার পর দেশটির জনগণ আন্দোলন করছে।
আজান ব্রহ্ম বংশের আহ্বান
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পার্থ থেকে একটি রেকর্ড করা বার্তায় আজাহন ব্রহ্ম বলেন, “আমি শ্রীলঙ্কার সর্বস্তরের মানুষ যে সীমাহীন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সে সম্পর্কে অবগত হয়েছি। শ্রীলঙ্কার অনেক লোক শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের জন্য একসাথে মিলিত হতে দেখা গেছে। দয়া করে তাদের প্রতিবাদগুলো শান্তিপূর্ণ রাখার চেষ্টা করুন। আন্দোলন করা আপনার অধিকার তবে আন্দোলন করতে গিয়ে দেশের আরো ক্ষাতি যেন না হয়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনাদের দেখাতে হবে যে শান্তিতেও আন্দোলন করা যায়। কারন এই মুহুর্তে শান্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আন্দোলনে দয়া করে ধীরে হাঁটুন যা শান্তির অবস্থা তৈরি করে, দয়া করে অশ্লিল স্লোগান দেবেন না।”
শ্রীলঙ্কা কয়েক দশকের মধ্যে তার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। সীমাহীন মুদ্রস্ফীতি, বিদ্যুত, জ্বালানি ও খাদ্যের অভাব চরম আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে শ্রীলঙ্কা সরকার শ্রীলঙ্কাকে খেলাপী ঋণ বলে ঘোষণা করেছে।
এরমধ্যে, শ্রীলঙ্কার রুপি বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ-কার্যকারি মুদ্রায় পরিণত হয়েছে। এপ্রিলের শুরুর দিকে ঐতিহাসিক সর্বনিম্নে নেমে গেছে শ্রীলঙ্কার মুদ্রার মান। সঙ্কট বৃদ্ধি পাওয়ায় বিগত দুই বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ 70% হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে দেশ খাদ্য বা জ্বালানীর মতো মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি আমদানি করতে পারছে না শ্রীলঙ্কা।
সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার কারণে ক্ষুব্ধ শ্রীলঙ্কানরা কারফিউ আদেশ এবং রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপাকসে কর্তৃক ঘোষিত জরুরি অবস্থার অবমাননা করে বারবার ব্যাপক বিক্ষোভে রাস্তায় নামছে। আন্দোলনরতরা রাজাপাকসে পদত্যাগ দাবী ও দেশের নিয়ন্ত্রণ রাজাপাকসের পরিবারের কাছ থেকে রক্ষার স্লোগান দেয়।
বৌদ্ধধর্ম শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রধর্ম। শ্রীলঙ্কা ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ২০১২ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুসারে জনসংখ্যার ৭০.২ শতাংশ থেরবাদ বৌদ্ধ হিসাবে চিহ্নিত। শ্রীলঙ্কার ১২.৬ শতাংশ হিন্দু, মুসলিমরা সংখ্যায় ৯.৭ শতাংশ, খ্রিস্টান ৭.৪ শতাংশ এবং অন্যান্য ০.০৫ শতাংশ। রাষ্ট্রধর্ম বৌদ্ধ হলেও সংবিধানে সকল নাগরিকের জন্য ধর্মের স্বাধীনতা এবং সমতার অধিকারেরও বিধান রয়েছে।
আরো পড়ুন>>
- শ্রীলঙ্কার জন্য সাহায্য চাইলেন ইয়োহনি ডি সিলভা।
- ভাইরাল সেই বৌদ্ধ ভিক্ষু মারা গেছে।
- উগান্ডায় প্রথম বৌদ্ধ প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন।
- বুদ্ধের সার্বজনীন উপদেশ “চারি ব্রহ্ম বিহার”।
- দুটি খারাপ ইট || হৃদয়ের দরজা খুলে দিন থেকে সংকলিত।