জগ্যেসা মন্দিরে অগ্নিকাণ্ড: সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ

জগ্যেসা মন্দিরে অগ্নিকাণ্ড: সিওলের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ কেন্দ্র জগ্যেসা মন্দির এলাকায় মঙ্গলবার সকালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
আগুনটি মন্দির সংলগ্ন কোরিয়ান বৌদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতি স্মৃতি ভবনে লাগে, যেখানে একটি বিশেষ প্রদর্শনী চলছিল। এতে প্রায় ৩০০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়, এবং দামি বৌদ্ধ নিদর্শন দ্রুত নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়।

জগ্যেসা মন্দিরে অগ্নিকাণ্ড: দ্রুত পদক্ষেপ সূত্রপাত ও দমকল বিভাগের তৎপরতা

দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় অগ্নি নির্বাপক সংস্থা জানায়, সকাল ১০টা ২২ মিনিটে আগুন লাগে এবং ১১টা ৫৭ মিনিটে তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনাস্থলে ১৪২ জন ফায়ারফাইটার ও ৩৫টি ইঞ্জিন অংশ নেয়।
সৌভাগ্যক্রমে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বৌদ্ধ নিদর্শন ও সাংস্কৃতিক বিপদ

ঘটনার সময় মন্দির চত্বরে চলছিল “হোসন ঊইগিয়ম: তুলি ছোঁয়ায় প্রতিফলিত বুদ্ধ” শীর্ষক একটি বিশেষ প্রদর্শনী, যেখানে ৩৩টি মূল্যবান শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছিল। এর মধ্যে ছিল ৯টি জাতীয় ধন (National Treasures) এবং ৯টি রাষ্ট্রীয় ঘোষিত ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন (Treasures)

দক্ষিণ কোরিয়ার হেরিটেজ সার্ভিস জানায়, ৮টি অতি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন, যার একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে চিহ্নিত, তা জিয়ংবকগং প্রাসাদে অবস্থিত জাতীয় রাজপ্রাসাদ জাদুঘরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকি ২৫টি প্রদর্শনীর মূল্যবান বস্তু স্থানে রাখা হয়েছে, তবে পর্যবেক্ষণ চলছে।

জগ্যেসা মন্দির ও জগ্যে অর্ডারের ভূমিকা

জগ্যেসা মন্দির, দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম বৌদ্ধ সম্প্রদায় জগ্যে অর্ডার-এর প্রধান কেন্দ্র। এটি ধর্মীয় অনুশীলন, সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
এই অগ্নিকাণ্ডে মূল মন্দিরের কোনো স্থাপত্যগত ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

জগ্যে অর্ডার এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে, “এই আকস্মিক আগুনে জাতির এবং বৌদ্ধ সমাজের উদ্বেগের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নেব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং এমন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

এই অগ্নিকাণ্ডে দক্ষিণ কোরিয়ার বৌদ্ধ ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক সম্পদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
দ্রুত পদক্ষেপ এবং বৌদ্ধ নিদর্শন সুরক্ষার মাধ্যমে জগ্যেসা মন্দিরে অগ্নিকাণ্ড পরিস্থিতিকে দক্ষভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশংসা পাওয়া যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *