গত ১৪ মে ২০২৫ বিচারপতি ভূষণ রামকৃষ্ণ গবৈ (B.R. Gavai) ভারতের ৫২তম প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of India) হিসেবে গত ১৪ মে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছ থেকে শপথ গ্রহণ করেন। এই শপথের মধ্য দিয়ে তিনি ভারতের ইতিহাসে প্রথম বৌদ্ধ প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ পদে আসীন হলেন।
গবৈ আগামী ২৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত, অর্থাৎ ছয় মাসেরও বেশি সময় দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১২৪(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে তাকে নিয়োগ দেন এবং ২৯ এপ্রিল আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় তার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
বিচারপতি গবৈ-এর পেশাগত যাত্রা:
- ২০১৯ সালের ২৪ মে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে মনোনীত হন।
- ২০০৩ সালে বোম্বে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে এবং ২০০৫ সালে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
- পেশাগত জীবনের শুরুতে তিনি সংবিধান ও প্রশাসনিক আইন নিয়ে চর্চা করতেন।
- নাগপুর, অমরাবতী মিউনিসিপাল কর্পোরেশন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল ছিলেন।
বিচারপতি গবৈ একজন গর্বিত বৌদ্ধ। তিনি বলেন, “আমার পিতা আর.এস. গবৈ বুদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন বাবাসাহেব আম্বেদকরের সঙ্গে। আমি গর্বিত যে আজ আমি দেশের প্রথম বৌদ্ধ প্রধান বিচারপতি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি সব ধর্মকেই শ্রদ্ধা করি—মন্দির, দরগাহ, জৈন মন্দির, গুরুদ্বারা—সর্বত্রই আমি যাই।”
সুপ্রিম কোর্টের একটি ৭-সদস্য বিশিষ্ট সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচারপতি গবৈ “ক্রিমি লেয়ার” নীতিকে উচ্চপদে উঠে যাওয়া দলিত ও উপজাতিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য করার পক্ষে মত দেন। তিনি বলেন, “একজন আইএএস কর্মকর্তার সন্তানকে গ্রামীণ এলাকার ম্যানুয়াল শ্রমিকের সন্তানের সঙ্গে একইভাবে দেখলে সংবিধানের ন্যায়ের নীতি ব্যাহত হয়।”
বিচারপতি বি.আর. গবৈ-এর নেতৃত্বে ভারতের বিচার বিভাগ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সাম্যভিত্তিক ভাবনার নতুন দিগন্তে প্রবেশ করল, যা সমাজে নতুন আশার আলো জ্বালাবে।