ধর্মের জন্য প্রেম ত্যাগ – বুদ্ধের জীবনে অনন্ত শান্তির শিক্ষা

ধর্মের জন্য প্রেম ত্যাগ: বর্তমান সময়ে আমরা এমন এক বাস্তবতার সম্মুখীন হচ্ছি, যেখানে কিছু বৌদ্ধ নারী প্রেমের টানে নিজেদের জন্মগত ধর্ম ত্যাগ করে ভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করছেন। একে অনেকে নিছক ব্যক্তিগত বিষয় বলে উড়িয়ে দেন। কিন্তু এটি যতটা ব্যক্তিগত, ততটাই সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক এবং অস্তিত্বগত।

ধর্ম কেবল বিশ্বাস নয় — এটি আমাদের পরিচয়, মুল্যবোধ এবং আত্মার আশ্রয়।

বুদ্ধের প্রেম ত্যাগ: আত্মজয়ের শিক্ষা

গৌতম বুদ্ধ নিজেই প্রেম এবং পারিবারিক বন্ধনের ত্যাগের এক মহত্তম উদাহরণ। মাত্র ২৯ বছর বয়সে, তিনি প্রিয়তমা স্ত্রী যশোধরা এবং পুত্র রাহুলকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন — কোন ঘৃণা নয়, বরং বিশ্বমানবতার জন্য মুক্তির পথ খুঁজে পাওয়ার তাড়নায়।

বুদ্ধের বলেছেন: “সব মায়া, সব আসক্তি, দুঃখের মূল। যে আসক্তিহীন, সেই সত্যিকার শান্তিতে পৌঁছায়।” — ধম্মপদ

বুদ্ধ কখনো প্রেম অস্বীকার করেননি, কিন্তু প্রেম যদি মুক্তির পথে বাধা হয়, তবে সেই বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করার শক্তিকে তিনি শ্রেষ্ঠ বলে মনে করেছেন।

প্রেম নয়, ধর্মই চিরস্থায়ী আশ্রয়

বুদ্ধ বলেছেন: “নিজেকেই কর প্রথমে সুসংস্কৃত, তারপর অন্যকে শিক্ষা দাও। নিজেকে জয় করতে পারলে, তুমি সত্যিকারের বিজয়ী।” — ধম্মপদ

প্রেম যদি আপনাকে নিজের ধর্ম, আত্মপরিচয় এবং আধ্যাত্মিক পথ থেকে বিচ্যুত করে — তাহলে সেটি প্রেম নয়, মোহ। আর মোহের শেষ গন্তব্য হলো দুঃখ। সেই দুঃখ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ বুদ্ধের দেখানো ধর্মপথ।

আপনার আত্মার স্থায়ী আশ্রয় ধর্মেই, প্রেমে নয়। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আত্মজিজ্ঞাসা করুন — আপনি কার জন্য কী ত্যাগ করছেন, এবং সে ত্যাগ আপনাকে মুক্তি এনে দেবে কিনা।

ধর্মের জন্য প্রেম ত্যাগ করা যায়, কিন্তু প্রেমের জন্য ধর্ম ত্যাগ করলে আত্মা চিরদিন দুঃখের মধ্যে পড়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *