ভারতের বৌদ্ধ সার্কিট ঘুরে দেখলেন আছিয়ান দেশের প্রতিনিধি দল – বোধি যাত্রা ২০২৫

ভারতের বৌদ্ধ সার্কিট || লখনউ, ১৩ জুন ২০২৫
ভারতের বৌদ্ধ ঐতিহ্যকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে উত্তর প্রদেশ পর্যটন বিভাগ ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে আয়োজন করেছে একটি বিশেষ ছয়দিনব্যাপী ভ্রমণ কর্মসূচি—‘বোধি যাত্রা ২০২৫’। এই উদ্যোগটি গৃহীত হয়েছে মেকং-গঙ্গা সহযোগিতা (Mekong-Ganga Cooperation – MGC) প্রকল্পের আওতায়, যার মূল লক্ষ্য ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধন ও পর্যটন সম্ভাবনা বাড়ানো।

পাঁচটি আছিয়ান দেশের ৫০ সদস্যের প্রতিনিধি দল

২ থেকে ৭ জুন ২০২৫ পর্যন্ত চলা এই ভ্রমণে অংশ নেয় কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম থেকে আগত একটি ৫০ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদল। প্রতি দেশ থেকে নির্বাচিত হয় ১০ জন প্রতিনিধি, যাদের মধ্যে ছিলেন বৌদ্ধ ভিক্ষু, পর্যটন এজেন্ট, এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা। তাদের মাধ্যমে নিজেদের দেশে ভারতের বৌদ্ধ ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারতের বৌদ্ধ সার্কিট

পাঁচটি আছিয়ান দেশের ৫০ সদস্যের প্রতিনিধি দল

আগ্রা থেকে সারনাথ, তারপর বিহার — পূর্ণাঙ্গ বৌদ্ধ ভ্রমণপথ

এই প্রতিনিধিদল তাদের যাত্রা শুরু করে আগ্রা থেকে, এরপর পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করে ভারতের বৌদ্ধ সার্কিটের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ—শ্রাবস্তী, কপিলবস্তু, কুশীনগর, বারাণসী ও সারনাথ। এই ভ্রমণ শেষে তারা বিহারের বৌদ্ধ স্থাপনাগুলোর দিকে যাত্রা করেন। উল্লেখ্য, এই স্থানগুলো গৌতম বুদ্ধের জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বহন করে এবং বহু বৌদ্ধ ভক্ত ও পর্যটকের গন্তব্য।

উত্তর প্রদেশ সরকারের সমর্থন ও পরবর্তী সম্ভাবনা

উত্তর প্রদেশের পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রী জয়বীর সিং বলেন, “এই বিশেষ ‘বোধি যাত্রা’ ভারত ও আছিয়ান দেশের মধ্যে আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও গভীর করবে। ভারতের বৌদ্ধ সার্কিটকে আন্তর্জাতিক পর্যটনের মানচিত্রে আরও দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করাই আমাদের উদ্দেশ্য।”

ভ্রমণের এক পর্যায়ে প্রতিনিধিদল মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং উত্তর প্রদেশের বৌদ্ধ ঐতিহ্য, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং পর্যটন সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশনে অংশ নেন।

এই ধরনের উদ্যোগ শুধু ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক সংযোগ নয়, বরং আঞ্চলিক সহযোগিতা, সংস্কৃতি বিনিময় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটন সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভারতের বৌদ্ধ সার্কিট নিয়ে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ও প্রচারণা চালানোর সম্ভাবনাও উন্মোচিত হচ্ছে।

ঐতিহ্য ও পর্যটনের মিলনমেলা

বোধি যাত্রা ২০২৫ প্রমাণ করেছে যে ভারতের বৌদ্ধ সার্কিট শুধু ধর্মীয় ভ্রমণের কেন্দ্র নয়, বরং আন্তঃরাষ্ট্রীয় বন্ধন, সাংস্কৃতিক পরিচয় ও পর্যটনের শক্তিশালী মাধ্যম। এই ধরনের আয়োজন বিশ্বদরবারে ভারতের বৌদ্ধ ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি বৈশ্বিক পর্যটন খাতেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *