শাওন বড়ুয়ার পাঁচ খুনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

শাওন বড়ুয়া হত্যাকান্ড: চট্টগ্রামে আলোকচিত্রী শাওন বড়–য়ার পাঁচ খুনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ইমতিয়াজ আলম মুরাদ (২১), আশহাদুল ইসলাম ইমন (২৪), মো. তৌহিদুল আলম (২৩), মো. বাহার (২২), মো. আলমগীর (৩০)।

যাদের টার্গেট বিয়ে-অনুষ্ঠানে ছবি তোলেন এমন ফটোগ্রাফাররাই। গতকাল বুধবার এদের গ্রেফতারের কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (উত্তর) পঙ্কজ দত্ত।

এর আগে গত সোমবার দুপুরে শাওনের মোবাইলে ফোন আসে মোহরার একটি ক্লাবে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে ছবি তোলার কাজ আছে। ফটোগ্রাফি জগতের পরিচিত বড়ভাই জনির ফোনে ‘ক্ষ্যাপ’ ধরে নেয় শাওন। মোবাইল ফোনেই সবকিছু পাকা হয়। অগ্রিম হিসাবে ৫০০ টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানো হয়। ইভেন্ট পেয়ে ফটোগ্রাফার শাওন খুশি।

পরিচিত আরেক বড়ভাইয়ের কাছ থেকে ক্যামেরা সংগ্রহ করে একইদিন সন্ধ্যায় বেরিয়ে যায় ভেন্যুর উদ্দেশ্যে। তবে ভেন্যুতে প্রোগ্রাম হচ্ছিলো না জানিয়ে শাওনের বাইকে চেপে তাঁকে অনন্যা আবাসিকের ভেতরে নিয়ে যায় মুরাদ। সেখানে অপেক্ষা করছিল ইমনসহ আরো অনেকে। সেখানে পৌঁছালে চা-নাস্তা খেতে খেতে শাওনকে জনশুন্য এলাকায় নিয়ে সুযোগ বুঝে ছোরা ধরে ক্যামেরার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে তারা। ব্যাগ না দেওয়াতেই উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে তাঁকে ভয় লাগানোর চেষ্টা হয়, তাতেও কাজ না হওয়ায় বারংবার ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।এভাবেই খুনের শিকার হন ফটোগ্রাফার শাওন বড়ুয়া।

চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (উত্তর) পঙ্কজ দত্ত বলেন, ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি মোবাইল ধরে  হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনে নামে পুলিশ। মোবাইলের কলরেকর্ড যাচাই করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। প্রথমে বাহির সিগন্যাল এলাকা থেকে ইমনকে গ্রেফতার করা হয়। ইমনের তথ্যে বাকিদের নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরমধ্যে বাহারের কাছ থেকে শাওনের ছিনতাই যাওয়া ক্যামেরা ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, বিয়ে-অনুষ্ঠানে যারা ফটোগ্রাফি করে তারাই ওদের টার্গেট। বিভিন্ন মাধ্যমে নম্বর সংগ্রহ করে নামে-বেনামে ফটোগ্রাফারদের কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়াই তাদের কাজ। যে নম্বরগুলো ব্যবহার করে ছিনতাইয়ের ফাঁদ পাতা হয় তার বেশিরভাগেই ছিনতাই করা মোবাইল। ঘটনাস্থলে পাওয়া অপরাধীদের মোবাইল ফোনে আরো অনেক ফটোগ্রাফারের নম্বর পাওয়া গেছে। যার কারণে আঁচ করা যাচ্ছে তাদের সঙ্গে আরো অনেকে জড়িত আছে— তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!