জাপান ইউনেস্কোর মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বৌদ্ধ নথির দুটি সেট সুপারিশ করতে চাইছে। এর মধ্যে একটির বয়স হাজার বছরেরও বেশি বলে ধারনা করা হচ্ছে। দ্য আসাহি শিম্বুন সংবাদপত্র জানিয়েছে, ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা কমিটি ২০২৩ সালে নথি দুটি নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
ইউনেস্কোর মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড প্রোগ্রাম হল একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ যা মানবতার প্রামাণ্য ঐতিহ্য রক্ষার জন্য কাজ করে।
আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা কমিটি দ্বারা সুপারিশ প্রাপ্ত নথিই কেবল মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার ডকুমেন্টারি হেরিটেজ তালিকাভুক্ত করে। যে নথি গুলো আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা কমিটি বাছায় করেন তা বিশ্ব তাত্পর্যপূর্ণ এবং অসামান্য সর্বজনীন মূল্য সম্পর্কিত মানদণ্ডের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বিবেচনা করেই ইউনেস্কোর মহাপরিচালক দ্বারা অনুমোদিত হয়।
যে প্রাচীন নথিগুলোর জন্য আবেদন করা হয়েছে তা হিয়ান যুগের বৌদ্ধ সন্ন্যাসী এনচিনের (৮১৪-৮৯১) জীবনের সাথে জড়িত। হিয়ান এনচিন জাপানি বৌদ্ধধর্মের টেন্ডাই ঐতিহ্যের ষষ্ঠ পিতৃপুরুষ এবং জিমন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। দ্বিতীয় বৃহত্তর নথিগুলোর সেট বর্তমানে টোকির বিশুদ্ধ ভূমি বৌদ্ধ ধর্মের জোডো-শু স্কুলের প্রধান মন্দির জোজো-জিতে রাখা হয়েছে।
এনচিন নথিপত্র জাপানের একটি জাতীয় ধন হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে। নথিগুলো মূলত এনচিনের ব্যবহৃত চীন ভ্রমণ অনুমতি বিষয়ক কাগজপত্র। এনচিন একজন বৌদ্ধ পরিব্রাজক ও বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ছিলেন। চীনের তাং রাজবংশের চারপাশে তার ভ্রমণে ব্যবহৃত প্রকৃত অনুমতি পত্রগুলোই মূলত এনচিন নথিতে অন্তর্ভুক্ত।
এনচিন ছিলেন কুকাইয়ের দূরসম্পর্কিত চাচাতো ভাই (৭৭৪-৮৩৫) যিনি শিঙ্গন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। কুকাই ৮৫৩-৫৯ সাল পর্যন্ত চীনে পড়াশোনা করেছেন। তিনি প্রথমে মাউন্ট তিয়েনতাই এবং পরে শিয়ানের প্রাচীন রাজধানী কিংলং মঠে (যা চ্যাং নামেও পরিচিত) শানসি প্রদেশে অবস্থান করেছেলেন। সেখান থেকে তিনি টেন্ডাই এবং অধ্যাতিক বৌদ্ধধর্মের শিক্ষা ও অনুশীলন নিয়ে জাপানে ফিরে আসেন। পরে তিনি শাস্ত্রীয় জাপানি টেন্ডাই বৌদ্ধধর্মের বিকাশে কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন।
সংগ্রহ করা এই নথিগুলো জাপান ও চীনের মধ্যে ধর্ম ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ইতিহাসের অত্যন্ত মূল্যবান রেকর্ড এবং ডকুমেন্টারি। নথিগুলো চীনের তাং রাজবংশ ভ্রমণ ও পরিবহন নিয়ন্ত্রণের অন্তর্দৃষ্টি হিসাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।
আরো পড়ুন>>
- আমেরিকায় অগ্নিকাণ্ডে বৌদ্ধ বিহার ধ্বংস।
- স্টিভ জবসের ধর্মীয় বিশ্বাস।
- সরকারি বৌদ্ধ প্রতিনিধি দলের রাশিয়া ভ্রমণ।
- মিয়ানমারে শান্তির দূত হয়ে এসেছেন অর্হৎ মিয়াং সিয়াড।
- তথাগতের উত্তর করনীয়।
- মালংক্যপুত্রর ১০টি প্রশ্ন।