নয়া দিল্লি::
আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ কনফেডারেশন (IBC), ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতায়, ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে গত ৩ জুলাই আষাঢ়ী পূর্ণিমা উদযাপন করেছে। অনুষ্ঠানটি ভারতের জাতীয় জাদুঘর “জনপথ” এ অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় সারনাথে পাঁচজন ভিক্ষুকে বুদ্ধের প্রথম ধর্ম দেশনা দেওয়ার দিনটিকে সম্মান জানাতে বিশ্বজুড়ে প্রতিনিধিদের স্বাগত জানানো হয়।
এই মহতী অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ধর্মগুরু, প্রখ্যাত বৌদ্ধ শিক্ষক, পণ্ডিত এবং কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ভারতের জাতীয় জাদুঘর ”জনপথ” কে অনুষ্ঠানের ভ্যেনু হিবেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ এখানে বুদ্ধ এবং তাঁর প্রাথমিক শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত অনেক সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক সম্পদ ধারণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আইবিসির পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন আইবিসি সচিব খেনপো চিমেদ। একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, “বৈশাখী পর্ণিমায় গৌতম বুদ্ধ বিহারের বুদ্ধগয়ায় জ্ঞান অর্জনের পর উত্তর প্রদেশের সারনাথে আষাঢ়ী পূর্ণিমায় প্রথম পাঁচজন তপস্বী শিষ্যের কাছে ভগবান বুদ্ধ প্রথম ধর্মোপদেশা করেন। পৃথিবীতে এটিই ধর্ম চাকার প্রথম ঘোরার দিন। প্রথম দেশনায় ভগবান বুদ্ধ চারটি মহৎ সত্য এবং মহৎ আটটি মার্গের (পথের) কথা বর্ণনা করেন।
ভারতের রাষ্ট্রপতি, দ্রৌপদী মুর্মু, দিনটি উপলক্ষ্যে একটি রেকর্ড করা ভিডিও বার্তায় শেয়ার করেছেন, যেখানে তিনি যুবকদেরকে ব্যক্তিগত ক্ষমতায়ন এবং সমাজের উন্নতির জন্য বুদ্ধের বাণীকে হৃদয়ে গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
“আষাঢ়ী পূর্ণিমায়, আমরা ভগবান বুদ্ধের ধম্মের সাথে পরিচিত হয়েছিলাম, যা শুধুমাত্র আমাদের প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অংশ নয়, এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট্যও। আমাদের উচিত সারনাথের পবিত্র ভূমিতে শাক্যমুনির দেওয়া প্রথম উপদেশটি শেখা এবং বোঝা।”
অল ইন্ডিয়া রেডিও মতে, নেপালের সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশীলা সিরপালি ঠাকুরি, সম্মেলনে তার ভাষণে ভারত ও নেপাল একটি অভিন্ন বৌদ্ধ ঐতিহ্যকে ভাগ করে নেওয়ার উপর জোর দিয়েছিলেন। এদিকে, নেপালে আইবিসি সেক্রেটারি উল্লেখ করেছেন যে বুদ্ধের শিক্ষা সম্প্রীতি এবং বিশ্ব শান্তির জন্য একটি পথের পথ দেখায়।
ভারতীয় চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসারে আষাঢ় মাসের পূর্ণিমায় পড়া- গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে জুন/জুলাই-এর সাথে মিলিত- আষাঢ়ী পূর্ণিমা ভিন্ন ভিন্ন বৌদ্ধ অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে। দিনটি শ্রীলঙ্কায় এসলা পোয়া এবং থাইল্যান্ডে আসানহা বুচা নামে পরিচিত। শ্রীলংকা ও থাইল্যান্ডে দিনটি বছরের ১ আগস্ট পালিত হবে।
দিনটি বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের জন্য রেইন রিট্রিট বা বর্ষাবাসের সূচনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আষাঢ়ী পূর্ণিামা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন চন্দ্র মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বর্ষাবাসব্রত পালন করেন।