ডোগি পর্বতে শাক্যমুনি বুদ্ধ মূর্তি স্থাপনের কাজ শুরু

টুভার পবিত্র পর্বত দোগির চূড়ায় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সুবর্ণ শাক্যমুনি বুদ্ধ মূর্তি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সূত্রমতে জুলাই মাসেই নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সম্প্রতি টুভান সরকারের চেয়ারম্যান শোলবান কারা-ওল সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনটাই ঘোষণা করেছিলেন।

মূর্তি নির্মাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি বুয়ান বাশকির নেতৃত্বে এবং টুভা বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান বয়ান বাশকির নেতৃত্বে টুভার বৌদ্ধ বাসিন্দারা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছেন।

যত পড়বেন ততই জানবেন, আমি নিজেও টুভান দেশটির কথা এর আগে কখনো শুনিনি। নিউজ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রথম টুভান দেশটির নাম পড়লাম ও জানলাম। এবং এটাও জানতে পারলাম টুভান দেশটি একটি বৌদ্ধ প্রধান দেশ। পরবর্তীতে টুভান নিয়ে বিস্তারিত লিখবো। চোখ রাখুন বৌদ্ধবার্তায়।- সম্পাদক , বৌদ্ধ বার্তা  ডট কম।

কারা-উল তার সোশ্যাল মিডিয়া বার্তায় বলেছেন, “বুদ্ধের একটি ছবি তৈরির এই উচ্চ মিশন বুয়ান বাশকির জীবনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি পরীক্ষামূলক পর্ব শেষ করেছেন। এই ধরনের মূর্তি ঐতিহাসিক পর্বতের চূড়ায় তৈরি করা বৌদ্ধ বিশ্বাসের পুনরুজ্জীবন এবং টুভার জনগণের আধ্যাত্মিক বিশ্বাস বৃদ্ধির প্রতীক।”

Buddha in Dogee Mountain
ফেইজবুক থেকে সংগৃহীত

ডোগি মাউন্টেন (টুভান শব্দ дөгээлен (to lie) “মিথ্যা বলা”) টুভানের রাজধানী কিজিলের (Kyzyl) প্রধান প্রাকৃতিক আকর্ষণ। ইয়েনিসেই নদীর ডান তীরে শহরের কাছাকাছি অবস্থিত, পর্বতটি ১,০০০ মিটারেরও বেশি উচ্চতা বিশিষ্ট্য এবং এর শিখর থেকে কিজিল ও এর আশেপাশের মনোরম প্রকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

ডোগি হলো টুভার বৌদ্ধ পুনরুজ্জীবনের প্রতীক যেখানে লেখা আছে সহমর্মিতার মন্ত্র ওম মণি পদ্মে হুং (Om Mani Padme Hung)। লেখাটি ১২০ মিটার দৈর্ঘ ও ২০ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট এলাকা জুড়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল পাথরে সাদা রঙ ব্যবহার করে লেখা। মন্ত্রটি ২০০৬ সালে টুভা প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে সিনিয়র বৌদ্ধ সন্ন্যাসী, পঞ্চম কাম্বি লামা জাম্পেল লোডয়, গিউডমেড এর তিব্বতীয় মঠ এবং এনারেল ফাউন্ডেশনের সহায়তায় স্থাপন করা হয়েছিল।

Om Mani Padme Hung
Om Mani Padme Hung

জ্যাম্পেল লোডয় ২০০৮ সালে প্রথম ডোগি পর্বতের চূড়ায় একটি বুদ্ধমূর্তি স্থাপনের ধারণাটি প্রস্তাব করেছিলেন। টুভার বাসিন্দাদের অর্থায়নে ২০১১ সালে মূর্তির নির্মাণ শুরু হয়। প্রকল্পের নকশা অনুসারে, বুদ্ধ পদ্ম ফুলের আকারে একটি সিংহাসনে ধ্যানের ভঙ্গিতে বসবেন। প্রাথমিকভাবে মূর্তির উচ্চতা প্রায় ৪০ মিটার করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। এরপর ২১ মিটার করার প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ডিজাইনাররা নয় মিটার উচ্চতা রাখার পক্ষে মত দেন। ১১x৮ মিটারের ভেতরের চেম্বার সহ নিচের অংশটি দুটি ভাগে বিভক্ত।

পরিকল্পনা মতে একদিকে মন্দির, এবং অন্যদিকে ১০০ টন শস্য রাখা স্থান, যা টুভান বৌদ্ধ বিশ্বাস অনুসারে সম্পদের প্রতীক। মন্দিরটি একটি চ্যাপেল হিসাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে যেখানে তীর্থযাত্রীরা প্রার্থনা করতে পারে এবং আচার অনুষ্ঠান করতে পারে।

Buddha in Dogee Mountain

ডোগির চূড়ায় শাক্যমুনি বুদ্ধের স্বর্ণমূর্তি নির্মাণ টুভানদের জন্য অত্যান্ত ধর্মীয় তাৎপর্যপূর্ণ কাজ হয়ে দাড়িয়েছে। কিজিলের দিকে তাকিয়ে থাকা বুদ্ধের মুর্তি টুভানের সকল বাসিন্দাদের জন্য ইতিবাচক শক্তি, শান্তি, সমৃদ্ধি এবং শুভকামনা নিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। ডোগির যে স্থানে বুদ্ধের মুর্তিটি বসবে তা কিজিলের শহর ও উপকণ্ঠ থেকে মূর্তি স্পষ্ট দৃশ্যমান হবে।

আরো পড়ুন>>

শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!