সংখ্যালঘুদের উপর হামলার প্রতিবাদ: চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ, হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদসহ একাধিক সংগঠন।
রোববার (১১ আগস্ট) বিকেল ৪টা থেকে আন্দরকিল্লা মোড়ে অবস্থান নেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান নিয়ে চেরাগী পাহাড় প্রদক্ষিণ করেন তারা। একই এলাকায় গতকাল (শনিবার) ও সমাবেশ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
বাংলাদেশী বৌদ্ধদের অনেক সংগঠনও প্রতিবাদ সমাবেশ যোগ দেয়।
সমাবেশে হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং বাস্তুহারাদের জায়গা জমি ফিরিয়ে দেওয়ার সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান বক্তারা।
তাদের অনেকের হাতেই ছিল প্ল্যাকার্ড। সেখানে লেখা ছিল “শান্তি প্রিয় বৌদ্ধদের জমি দখল কেন?” বিহার ও বৌদ্ধদের বাড়ি ঘরে আগুন কেন? ‘আমরা কেন স্বাধীন নই’, ‘আমার মন্দিরে হামলা কেন?’, ‘দেশ ছাড়তে হুমকি কেন? রাষ্ট্র জবাব চাই’, ‘মানবসেবা যাদের ধর্ম তাদের ওপর হামলা কেন?’, ‘বাঁচতে হলে লড়তে হবে, আঘাত আসবে যেখানে প্রতিরোধ হবে সেখানে’।
কর্মসূচি চলাকালে চেরাগী পাহাড়মুখী সড়কে গাড়ি চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকে। কর্মসূচিতে সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বৌদ্ধসহ জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিহারে হামলা, অবৈধ জমি দখল, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, হত্যা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব ঘটনার বিচার করতে হবে। দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ না হলে, বিচার না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সমাবেশে জানানো হয়, দেশব্যাপী নির্যাতন ও লুটপাটের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর, মন্দির নির্মাণ করতে হবে। এ ছাড়া সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি করেন তারা।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়, দলটির নেতাদের ঘরবাড়ি, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেওয়া হয়, কোথাও কোথাও আগুন দেওয়া হয়।
এসবের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রতি রাতেই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা চট্টগ্রামের মন্দির, প্যাগোড়া, গির্জা পাহারা দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।