দক্ষতার সহিত বাক্য প্রয়োগ

দক্ষতার সহিত বাক্য প্রয়োগ অর্থাৎ বাক্য প্রয়োগে বুদ্ধিমত্তা। একজন মানুষ যে বাক্য প্রয়োগে দক্ষ সে কথা বলার আগেই যত্ন সহকারে পরিস্কার চিত্তের মাধ্যমে তার প্রতিটি শব্দ পরিশুদ্ধ করে। আমাদের চার পাশের পৃথিবীকে দেখার জন্য প্রকৃতি আমাদের দুটি চোখ দিয়েছে। আমাদের দুটি কানও রয়েছে যা আমরা শোনার জন্য ব্যবহার করি। কিন্তু আমাদের কেবল একটি মুখ রয়েছে খাদ্য গ্রহণ এবং কথা বলার জন্য।

দক্ষতার সহিত বাক্য প্রয়োগ অর্থাৎ বাক্য প্রয়োগে বুদ্ধিমত্তা। একজন মানুষ যে বাক্য প্রয়োগে দক্ষ সে কথা বলার আগেই যত্ন সহকারে পরিস্কার চিত্তের মাধ্যমে তার প্রতিটি শব্দ পরিশুদ্ধ করে। আমাদের চার পাশের পৃথিবীকে দেখার জন্য প্রকৃতি আমাদের দুটি চোখ দিয়েছে। আমাদের দুটি কানও রয়েছে যা আমরা শোনার জন্য ব্যবহার করি। কিন্তু আমাদের কেবল একটি মুখ রয়েছে খাদ্য গ্রহণ এবং কথা বলার জন্য।

এটার অর্থ যে প্রকৃতি চায় আমরা কথা বলার জন্য মুখ ব্যবহার কম করি আর বেশি শুনি এবং বেশি দেখি এমনটি। আমাদের উচিত সাবধান বা যত্নবান হওয়া, আমাদের কথা বলার ক্ষেত্রে এবং খাদ্য গ্রহণ উভয়ের ক্ষেত্রে। যদি আমরা কথা বলতে চাই, আমাদের উচিত এমন ভাবে কথা বলা যা আমাদের জন্য এবং শ্রোতাদের জন্য ভাল।

দক্ষতার বা শৈল্পিক বাক্যের বৈশিষ্ট সমূহ:

১। বাক্য সত্য হওয়া আবশ্যক: এর অর্থ যে আমরা যা বলি তা মিথ্যা হতে পারবে না। আমাদের কিছু বলার উদ্দেশ্য কোন ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি অথবা ভুল ব্যাথ্য প্রদান করবে না।

২। বাক্য হবে বিনয় সমৃদ্ধ: এটি শান্তি এবং শ্রদ্ধাপূর্ণ বাক্যকে নির্দেশ করে। শ্রোতার প্রতি বাক্য কুরুচিপূর্ণ, ক্লেশপূর্ণ বা যা অন্যকে আঘাত করে এমন বাক্য প্রয়োগ করা উচিত নয়।

৩। বাক্য ব্যবহার যোগ্য হতে হবে: এর অর্থ এটাই নির্দেশ করে যে প্রয়োগকৃত বাক্য যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে উভয় বাক্য প্রয়োগকারী এবং শ্রবণকারীর উপর। এমন কী যদি বাক্য সত্য এবং বিনয়ীও হয়। কিন্তু তা ব্যবহার উপযোগী না হয়, এটা বলা উচিত নয়।

দক্ষতার সহিত বাক্য প্রয়োগ

>>বুদ্ধের দর্শনে মানবতা

৪। বাক্য করুণাপূর্ণ হওয়া আবশ্যক: এটি বাক্যের প্রতি এমনটাই নির্দেশ করে যার উদ্দেশ্য অন্যকে ভাল অনুভূতি প্রদান করা এবং কেউকে যে কোন পরিস্থিতি সম্পর্কে খারাপ অনুভুত না করানো। বাক্যের উচিত উৎসাহ মূলক এবং শক্তি প্রদানকারী এইরূপ হওয়া। তৃতীয় বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ, যদি বাক্য সত্য, বিনয়ী এবং ব্যবহার উপযোগী ও হয় তোমার তা বলা উচিত নয় যখন বাক্য প্রযোগকারী রাগান্বিত থাকে। শ্রবণকারী হয়ত তা গ্রহণ করতে সক্ষম হবে না এবং শুধু একটি নেতিবাচক বাক্য দুটি মানুষের বন্ধুত্ব শেষ হবার কারণ হতে পারে।

৫। বাক্য সময়ের সাথে এবং অনুষ্ঠানের সাথে সংগতিপূর্ণ হওয়া বাঞ্চনিয়: এর অর্থ যে এমন কি যদি আমরা যা বলতে চাই তা উপরের চারটি বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলেও যায়, তাহলেও এটা অবশ্যই এড়িয়ে যাওয়া উচিত হবে যদি এই বাক্য কোন ব্যক্তির সংস্কৃতি অথবা ঐতিহ্যের বিপক্ষে অবস্থান নেয়।

এই ধরণের বাক্য হয়ত ভুল তথ্য বা খবরের কারণ হয় এবং হয়ত কষ্টদায়ক হয় সবার জন্য এমন কি আমাদের জন্যও। সঠিক সময়ে কথা বলা অর্থাৎ যা আমরা জানি যে, কি এবং কখন কিছু বলতে হয় এবং কখন নিরবতা পালন করতে হয় তা। এটি আরও সংযুক্ত করে কতটা সময় পর্যন্ত আমাদের কথা বলা উচিত সেটাও।

আমাদের উচিত সাবধান থাকা তার উপর যে আমাদের কথার জবাবে কি ফিরে আসে যা আমরা অপরের প্রতি বলে থাকি। সঠিক জায়গায় কথা বলা অর্থাৎ জানা যে আছি বা থাকি সে জায়গায়  সঠিক কিনা যা আমরা বলতে চাই উদাহরণ স্বরূপ এমন কি যদি আমাদের ভাল উদ্দেশ্য থাকে আমাদের বন্ধুদের বলার জন্য মদ পান বন্ধ কর। যদি আমরা তা বলি যখন তারা তাদের বন্ধুদের সাথে মদ পান করে তখন, এটা হয়ত তাদেরকে বিব্রতকর করবে এবং অপমানিত বোধ করবে তারা। ভবিষ্যতে তারা হয়ত আমাদের কথা আর শুনবে না।

 “একজন মানুষ যিনি চটপটে তিনি কেবল কথা বলাতেই ভাল এমনটি নয়, তিনি নীরবতা পালনেও উত্তম ভূমিকা রাখেন। একজন মানুষ যিনি শৈল্পিক বা দক্ষ বাক্য প্রয়োগে তার জানা প্রয়োজন কী বলা উচিত নয় তার চেয়ে বেশি যে কি বলা উচিত তা জানা।”

একজন শান্তির প্রতিনিধির বৈশিষ্ট সমূহ:

১। তোমার উচিত অন্যের মতামত শোনা তাদেরকে মতামত প্রদানে বিঘ্ন না ঘটিয়ে।

২। তোমার উচিত কথা বলার সময় অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ থাকা।

৩। তোমার উচিত আমরা যা বলি তা ধারণ করা কমপক্ষে যখন শ্রোতার সাথে আসল বিষয় নিয়ে যোগাযোগ করা হয়।

৪। তোমার উচিত মনে রাখতে সক্ষম হওয়া যে কী আমরা বলতে চাই তো।

৫। তোমার উচিত বিস্তারিত বোঝা যে কী আমাদের বলতে হবে তা।

৬। তোমার অন্যদেরকে আমাদের কথা বোঝানোর ক্ষমতা থাকতে হবে।

৭। তোমার এমন বাক্য প্রয়োগ করার ক্ষমতা থাকতে হবে যা ব্যবহার যোগ্য।

৮। তোমার অন্যান্যদের ঝগড়া এবং মারামারিতে প্ররোচিত করা উচিত নয়।

অযোগ্য বাক্য সমূহের ধরণ:

১। যে ব্যক্তির নিজের মধ্যে বিশ্বাস এর অস্তিত্ব নেই তার মুখে বিশ্বাসের বচন।

২। যে বক্তি নিজে শীল সমূহ ধারণ বা পালন করে না তার মুখে শীল সমূহের গুণগান ।

৩। যে ব্যক্তি কখনও পড়াশোনা করেনি তার মুখে লেখাপড়া বা শিক্ষার উপকারীতা সম্পর্কিত প্রশংসা বাক্য ।

৪ । যে ব্যক্তি কৃপণ এবং দানে উদার নয় তার মুখে দানের সুফলে প্রশংসা বাক্য।

৫। যে ব্যক্তি নিজে অজ্ঞানী তার মুখে প্রাজ্ঞতার সুফল সংক্রান্ত প্রশংসা বাক্য। নিন্মে প্রদত্ত গল্পটি একটি উদাহরণ দক্ষতার সহিত বাক্য প্রয়োগের।

#শান্তির জন্য মূল্যবোধ শিক্ষা থেকে কপিকৃত

শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!