মগধ বিশ্ববিদ্যালয়ে বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজ বিভাগ রক্ষায় রীতিমতো সংগ্রাম করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে ভারতের মগধ বিশ্ববিদ্যালয়ে চালুকৃত বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের মরমর অবস্থা। শিক্ষার্থীর অভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ভারতের মগধ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ভারত, জাপান, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম সহ সমগ্র এশিয়ার আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য এই বিভাগ চালু করা হয়েছিল। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে কর্তপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া সংবাদপত্রের রিপোর্ট মতে, অনুমোদিত ১১০ টি স্থান থেকে হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী বর্তমানে মগদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজে অধ্যায়নরত আছে। বর্তমানে কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারের মাত্র ৩৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে মগদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগটি কোন রকম চলছে। মগধ বিশ্ববিদ্যালয়ের বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজে শিক্ষক সংখ্যাও অত্যান্ত কম। এখানে মাত্র ২ জন শিক্ষক এই বিভাগটি সচল রেখেছেন।
মগধ বিশ্ববিদ্যালয়ের বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বিষ্ণু শঙ্কর জানান, কোভিড-১৯ মহামারীর আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগটি ভালই চলছিল। মহামারীর পর থেকে বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সংখ্যা আশংকাজনক ভাবে কমেছে। বর্তমানে এই বিভাগটি সংকটময় মুহুর্ত পার করছে।
ইন্ডিয়া টাইমস কে বিষ্ণু শঙ্কর বলেন, “ভারতে কোভিড-১৯ মহামারীর ভয়াবহতার কারনে বিদেশী শিক্ষার্থীরা ভারতে এসে [বৌদ্ধ অধ্যায়ন কোর্সে] ভর্তি হতে সাহস পাননি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা গ্রহণও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।”
মগধ বিশ্ববিদ্যালয়
মগধ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬২ সালে বুদ্ধগয়ায় বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বুদ্ধগয়াতেই গৌতম বুদ্ধ পরম জ্ঞান লাভ করেছিলেন। গৌতম বুদ্ধের ঐতিহাসিক বোধিজ্ঞান অর্জনকে স্মরণীয় করে রাখতে মগধ বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
১৯৮৪ সালে তৎকালীন গভর্ণর এবং চ্যান্সেলর এ.আর. কিদওয়াই এবং শ্রীলঙ্কার হাই কমিশনার মগধ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজ বিভাগটি চালু করেছিলেন। এর পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মিশনের প্রধানরা বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজ বিভাগ প্রতিষ্ঠা ও এর উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস-চ্যান্সেলর ডক্টর কে কে দত্ত-ও ইতিহাস বিভাগের অধীনে নতুন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে বৌদ্ধধর্ম এবং বৌদ্ধ সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিলেন।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে, ২০ শতকে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে সম্মানসূচক পিএইচডি ডিগ্রী দেওয়ার পর বিশ্বের দরবারে বিশ্ববিদ্যালয়টি মর্যাদা হারাতে থাকে। এরপর ব্যাপকহারে প্রতারণামূলক ডিগ্রী প্রদান, সার্টিফিকেট জালিয়াতি বিভাগের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে। বর্তমানে এর হারানো সুনাম ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরিকমিশন একটি মূল্যায়নমূলক প্রতিবেদনে মগধ বিশ্ববিদ্যালয় বুড্ডিস্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের অনেক দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষক, স্বল্প সহায়তা কর্মী, দুর্বল আর্থিক পরিস্থিতি, পৃথক বৌদ্ধ-বান্ধব হোস্টেলের অভাব এবং প্রশাসনিক বিধিনিষেধ অন্যতম।
আরো পড়ুন>>
- কোরিয়ান নতুন বৌদ্ধ বিহার উদ্বোধন।
- বৌদ্ধ তহবিলে ৩.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দান করেছেন মার্কিন দম্পতি।
- ধর্ম বিজয় শুভ হউক: হাসানুর রহমান।
- আজ ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত বুদ্ধ পূর্ণিমা।
- বৌদ্ধদের প্রতি তামিম ইকবালের শুভেচ্ছা: শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা।
- বুদ্ধের মস্তকে গুড়ি গুড়ি এসব কি?
- গৌতম বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্মমত: নূহ উল আলম।
- গৌতম বুদ্ধের জীবনী: জন্ম থেকে মহাপরিনির্বাণ।
- তীর্থস্থান: বুদ্ধগয়া
- মহাতীর্থস্থান: লুম্বিনী
- তীর্থস্থান: সারনাথ