বুদ্ধ জীবনে উপার্জিত অর্থ সম্পদকে ৪ ভাগে ভাগ করতে নির্দেশ দিয়েছে। বুদ্ধ বলেছেন, “একেন ভোগে ভুঞ্জেয্য দ্বীহি কম্মং পযোজযে, চতুত্থঞ্চ নিধাপয্য আপদাসু ভবিস্সতীতি।”
অর্থাৎ যাহা আয় বা লাভ করবে তা চার ভাগে ভাগ করা কর্তব্য। তাদের একভাগ পরিভোগ করবে, দুই ভাগ কৃষিবানিজ্যার্থে নিযুক্ত করবে, চতুর্থ ভাগ বিপদের জন্য সঞ্চয় করে রাখবে যাতে তা বিপদকালে কাজে আসে।” কারণ গৃহী মত্রেরই চিরকাল সমান যায় না। যখন বিপদ আসবে; তখন তা ব্যবহার করে বিপদ হতে মুক্ত হতে পারবে। ভোগের ১ম ভাগকে দুই ভাগ করতে বলেছে বুদ্ধ। বুদ্ধ বলেন, “যাহা পরিভোগের জন্য রাখিবে তাহাও দুই ভাগ করিবে, একভাগ পরিভোগ করিবে এবং অন্য ভাগ দান করিবে।
তাছাড়ও বুদ্ধ উপার্জনের বাণিজ্যগুলোর মধ্যে ৫টি বিশেষ বাণিজ্যকে নিষেধ করেছেন।
জীবন যার আছে তাকেই জীবন ধারন করতে হয়। আমরা মানুষ হিসেবে নিজেদের একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে ফেলে দিয়েছি। আমরা ব্যবসা-বানিজ্য, চাকরি, কর্ম ইত্যাদি করে অর্থ উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করি।
যে কোন কাজের দুটি ধিক থাকে একটি হল ভাল অপরিটি মন্দ। জীবিকা নির্বাহের তাগিদে মন্দ বা পাপ বাণিজ্য করতে নিষেধ করেছেন বুদ্ধ। বুদ্ধ মন্দ বা পাপ বাণিজ্য বলতে ৫টি বাণিজ্যকে নিষিদ্ধ করেছে। যথা- ১। অস্ত্র বাণিজ্য, ২। প্রাণী বাণিজ্য, ৩। মাংস বাণিজ্য, ৪। নেশা বাণিজ্য ও ৫। বিষ বাণিজ্য।
এই পঞ্চ বাণিজ্য মানুষ্য ও প্রাণীকূলের জন্য দুঃখ নিয়ে আসে।
অস্ত্র দ্বারা একে অপরকে মারার জন্য ব্যবহার করা হয়। তাই অস্ত্র বানিজ্যকে বুদ্ধ পাপময় বানিজ্য বা নিষিদ্ধ বানিজ্য বলেছেন।
প্রাণীমাত্রই প্রাণ আছে, প্রাণের প্রতি মায়াও আছে। একটা ছোট্ট পীপড়াও প্রাণ বাঁচাতে দিক বেদিক ছুটে বেড়ায়। আমরা যেহেতু কোন প্রাণির প্রাণ দান করতে পারিনা তেমনি কোন প্রাণির প্রাণ হনন করারও অধিকার আমাদের নাই। তাই প্রাণি বাণিজ্য ও মাংস বাণিজ্যকে বুদ্ধ নিষেধ করেছেন।
যা পান করলে বা সেবন করলে স্বীয় সচেতন মন মানসিকতার পরিবর্তন হয়, অচেতন হয়, হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয় এমন দ্রব্য পান করা বিধেয় নয়। এভাবে সকলের কথা চিন্তা করে মোহচ্ছন্ন বা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বিপথে গমণ করতে পারে এমন নেশা জাতীয় দ্রব্য বাণিজ্য হতেও বিরত থাকা প্রয়োজন।
মানুষের জীবনে অর্থ উপার্জনে সুবিধার জন্য বিষ জাতীয় বস্তু বিক্রয় করা সমীচীন নয় যা ক্রেতারা খেয়ে নিজের মহামূল্যবান জীবনকে নষ্ট করে দিতে পারে। বিষ বাণিজ্য নিজের পক্ষেও ক্ষতিকর এবং অপরের পক্ষেও মহা ক্ষতিকর কারণ হয়।