বৌদ্ধ সংগঠন দ্য ধাম্মা সেন্টার অব চোলচেস্টার (ডিসিসি) ও হিন্দু কাউন্সিল, যুক্তরাজ্য পৃথক চিটিতে তথাকতিত ”রূপান্তর থেরাপি” বন্ধ করার জন্য নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছে।
রূপান্তর থেরাপি হলো মানুষের যৌন পরিচয়বাহী লিঙ্গকে কৃত্রিম উপায়ে রূপান্তর করা। অর্থাৎ পুরুষ থেকে মহিলা আর মহিলা থেকে পুরুষে রূপান্তর হওয়া বুঝায়।
এক স্বাক্ষাতকারে বৌদ্ধ ভিক্ষু ভেন. এইচ পান্নভামসা থেরো বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে সকল মানুষের সতন্ত্র যৌনতা এবং লিঙ্গ পরিচয় আছে। এবং এটি সকল প্রাণীর জন্য একটি মূল্যবান অঙ্গ। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে কোন ব্যক্তির যৌনতা, লিঙ্গ পরিচয় বা লিঙ্গ পরিবর্তনকে কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। আধুনিক বিশ্বের (“রূপান্তর থেরাপি”) এর কোনও স্থান নেই। এটি একটি অনৈতিক, ক্ষতিকারক এবং সমর্থন অযোগ্য কাজ।”
”আমরা সরকারকে অনতিবিলম্বে এই ঘৃণ্য, অবজ্ঞাপূর্ণ এবং ক্ষতিকারক চর্চাটি নিষিদ্ধ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”
১৬ জুন হিন্দু কাউন্সিল, যুক্তরাজ্যের থেকে প্রকাশিত ভিন্ন এক চিঠিতেও অনুরূপ মত প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে-
আমাদের বিশ্বাস, ব্রহ্মা নারী-পুরুষ সবাইকে সমান করে সোনালী ডিম্বে (হিরণ্যগর্ভ) সৃষ্টি করেছেন। ঋগ্বেদের ঋষিগণ প্রকৃতির (প্রাকৃত) অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। বৈদিক ঋষিগণ কর্মের বিধিকে স্বীকার করেছেন। তাদের মতে নারী পুরুষ সবাই স্বাধীন তাদের কর্ম অনুসারেই তারা তাদের জীবন উপভোগ করবে।
এই চিটি গুলো ব্রিটিশ সংস্থা ওজান ফাউন্ডেশন স্যোশাল মিডিয়ায় তাদের নিজস্ব আইডি থেকে শেয়ার করেছেন। ওজান ফাউন্ডেশন হলো লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করা একটা সংগঠন। সংগঠনটির পরিচালক জেন ওজেন একজন সমকামী ইভাঞ্জেলিকাল খ্রিস্টান।
চলতি বছর মে মাসে যুক্তরাজ্য সরকার এই “ঘৃণ্য অভ্যাসগুলি যাতে মানসিক এবং শারীরিক ক্ষতির কারণ হতে না পারে” তা রোধ করার জন্য অগ্রীম ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব দেয়। ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সেই ঘৃণ্য কাজটি নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে সেই প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ হয়নি। (রয়টার্স)
ইউরোপীয় বৌদ্ধ ইউনিয়ন ১ মার্চ, ২০১৮ সালে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিল। বিবৃতিতে বলা হয়- আধুনিক চিকিত্সা এবং আধ্যাত্মিক বিশ্বে লিঙ্গ রূপান্তর থেরাপির কোনও স্থান নেই। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ জুড়ে অবস্থিত বড় বড় বৌদ্ধ স্কুল ও সংগঠন এই রূপান্তরকে চরমভাবে নিরুৎসাহিত করে।
আরো পড়ুন>>
- অভিধর্ম পিটকের উপর ভারতীয় পণ্ডিতের বই প্রকাশ।
- আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দালায় লামা লাইব্রেরী ও শিক্ষা কেন্দ্র।