নেপালে বাংলাদেশী বৌদ্ধ বিহার নির্মানের চুক্তি স্বক্ষর

বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনিতে একটি বাংলাদেশী বৌদ্ধ বিহার নির্মাণের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে কাঠমান্ডুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। গত ৬ অক্টোবর নেপালের লুম্বিনি ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ দূতাবাসের মধ্যে এই ঐতিহাসিক চুক্তিটি স্বাক্ষর করার মাধ্যমে সম্পাদিত হয়।

চুক্তিটি গত বছরের জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বাংলাদেশ মন্ত্রিসভার একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের মাধ্যমে নেপালের লুম্বিনি ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে চুক্তির একটি খসড়া অনুমোদন করে। প্রকল্পটি নেপালে তৎকালীন বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস এবং প্রথম সচিব কনসাল অসিত বরণ সরকারের ব্যক্তিগত আগ্রহের জের ধরে এই পর্যন্ত এসেছে।

“নেপালে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, নেপালের লুম্বিনি ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয়ে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরকালে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী এবং লুম্বিনি ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের ভাইস-চেয়ারম্যান মেত্তেয় সাক্যপুত্র উপস্থিত ছিলেন” ঢাকা-ভিত্তিক এনজিও কর্মী, গবেষক ও ফ্রিল্যান্স লেখক প্রতীক হাসান গত ১০ অক্টোবর এই তথ্য জানিয়েছেন।

নেপালে বাংলাদেশের বৌদ্ধ বিহার
চুক্তির একটি অংশ

হাসান বলেন, “লুম্বিনি ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের পক্ষ থেকে প্রকল্পের প্রধান সরোজ ভট্টরাই এবং অন্যান্য কর্মকর্তারাও স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।দূতাবাসের পক্ষে প্রথম সচিব আলমগীর ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।”

মন্ত্রিপরিষদ-সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গত বছর বলেছিলেন, প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় বাবদ ৫১২ মিলিয়ন বাংলাদেশী টাকা (US$ 6 মিলিয়ন) সহ লুম্বিনি ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নকশা সহ সমস্ত কার্যক্রম সম্মত এবং অনুমোদন করেছে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু অন্যান্য চুক্তির মতো একটি দেশের সঙ্গে এটিও একটি চুক্তি, তাই বিষয়টি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার সামনে এসেছিল।

“চুক্তি অনুসারে, লুম্বিনি ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট প্লট বরাদ্দ করবে এবং বাংলাদেশ সরকার সেই বরাদ্দকৃত প্লটে বৌদ্ধ বিহার নির্মাণের সমস্ত খরচ বহন করবে,” জনাব হাসান মিডিয়াকে বলেন।

নেপালের ৫নং প্রদেশ রূপান্দিহি জেলায় অবস্থিত, লুম্বিনি বৌদ্ধ তীর্থযাত্রীদের জন্য বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক স্থান। লুম্বিনিতে বেশ কয়েকটি পুরনো মন্দির রয়েছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র হলো মায়া দেবী মন্দির। প্রত্নতত্ত্ববিদরাই জায়গাটিকে চিহ্নিত করেছেন যেখানে শাক্যমুনি বুদ্ধ সম্ভবত জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অশোকের স্তম্ভের নিকটবর্তী শিলালিপিগুলিও স্থানটিকে বুদ্ধের জন্মস্থান বলে উল্লেখ করে। ১৯৯৭ সালে, লুম্বিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বাংলাদেশ সরকার দেশের বৌদ্ধ ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্প চালু করেছে। ২০১৫ সালে, জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থার (ইউএনডব্লিউটিও) সহযোগিতায়, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো “Developing Sustainable and Inclusive Buddhist Heritage and Pilgrimage Circuits in South Asia’s Buddhist Heartland” শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানটি টেকসই উন্নয়ন এবং দক্ষিণ এশিয়া এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সীমান্ত পর্যটন সার্কিট এবং রুটগুলির প্রচারের জন্য একটি উন্মুক্ত আলোচনা ছিল।

আরো পড়ুন>>

শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!